০৯-১২ ফেব্রুয়ারি ২০২২ এসএমই ফাউন্ডেশন এবং অ্যাসোসিয়েশন অব ফ্যাশন ডিজাইনার্স বাংলাদেশ (এএফডিবি)-এর উদ্যোগে রাজধানীতে চার দিনব্যাপী ৪র্থ হেরিটেজ হ্যান্ডলুম ফেস্টিভ্যাল ২০২২ আয়োজন
রাজধানীতে ৪র্থ হেরিটেজ হ্যান্ডলুম ফেস্টিভ্যাল ২০২২ উদ্বোধন করেছেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী: চলবে ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত
রাজধানীতে চার দিনব্যাপী ৪র্থ হেরিটেজ হ্যান্ডলুম ফেস্টিভ্যাল ২০২২ শুরু হয়েছে। আজ ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২ গুলশান শুটিং ক্লাবে বিকাল ৪টায় ফেস্টিভ্যালের উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি জাতীয় সংসদের মাননীয় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এমপি। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন শিল্পমন্ত্রী জনাব নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন এমপি, সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী জনাব কে এম খালিদ এমপি এবং গেস্ট অব অনার বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি সভাপতি জনাব ওয়াসিকা আয়েশা খান এমপি। সভাপতিত্ব করেন এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক ড. মো. মাসুদুর রহমান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. মফিজুর রহমান এবং ফেস্টিভ্যালের নানা দিক তুলে ধরেন অ্যাসোসিয়েশন অব ফ্যাশন ডিজাইনার্স বাংলাদেশ (এএফডিবি) সভাপতি মানতাশা আহমেদ।
বাংলাদেশ তাঁত ও বুনন শিল্পের ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ। ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় এদেশের এলাকাভেদে বিভিন্ন ধরনের তাঁত, বস্ত্র ও কারুশিল্প বিকশিত হয়েছে। এর মধ্যে সোনারগাঁওয়ের ঐতিহ্যবাহী জামদানি, মিরপুরের বেনারসী শাড়ি, টাঙ্গাইলের তাঁত ও শাড়ী, সিরাজগঞ্জের লুঙ্গি ও তাঁত বস্ত্র, নকশীকাঁথা, কুমিল্লার খাদী, রাজশাহীর সিল্ক, মনিপুরি তাঁত ও রাঙ্গামাটির নৃ-গোষ্ঠির তাঁতপণ্য দেশজুড়ে বিখ্যাত। বাংলাদেশের গৌরবময় ঐতিহ্য ও কৃষ্টির অংশ ঐতিহ্যবাহী তাঁতপণ্যের প্রস্তুতকারক ও শীর্ষস্থানীয় ডিজাইনারদের মধ্যে সংযোগ স্থাপন, বিলুপ্তি রোধকরণ এবং সর্বোপরি দেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় এসএমই ফাউন্ডেশন এবং অ্যাসোসিয়েশন অব ফ্যাশন ডিজাইনার্স বাংলাদেশ (এএফডিবি) টানা চতুর্থবারের মত আয়োজন করেছে হেরিটেজ হ্যান্ডলুম ফেস্টিভ্যাল। এই ফেস্টিভ্যাল আয়োজনের প্রধান উদ্দেশ্যসমূহ হলো:
(ক) বাংলার গৌরবময় ঐতিহ্য ও কৃষ্টির অংশ হিসাবে দৈনন্দিন জীবনে ঐতিহ্যবাহী তাঁত পণ্যের ব্যবহার প্রদর্শন করা;
(খ) ঐতিহ্যবাহী তাঁত পণ্যের প্রচার, প্রসার এবং বাজারজাতকরণের সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা;
(গ) তাঁত পণ্য প্রস্তুতকারক এবং শীর্ষস্থানীয় ডিজাইনারদের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করা;
(ঘ) স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে স্থানীয় তাঁত পণ্য প্রস্তুতকারকদের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করা; এবং
(ঙ) বাংলার ঐতিহ্যবাহী পণ্যের বিলুপ্তি রোধ করা।
মেলায় বয়নশিল্প প্রদর্শনের পাশাপাশি প্রায় ৫০টি স্টলে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের জন্য প্রদর্শন করা হবে শাড়ী-লুঙ্গি-গামছা, খাদি, নকশিকাঁথা, বেনারসি শাড়ী, টাঙ্গাইল শাড়ী, জামদানি শাড়ী, শতরঞ্জি, পটচিত্র, রিক্সা পেইন্ট, জুয়েলারি, টেরাকোটা, পিতল, কাশা, শঙ্খ, মনিপুরী কাপড়, রাঙ্গামাটির চাকমাসহ অন্যান্য ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কাপড় ও হস্তশিল্প পণ্য, পাটজাত, বাঁশ ও বেতজাত পণ্য। থাকবে খাতভিত্তিক পণ্যের ইতিহাস নিয়ে তথ্যচিত্র, পণ্য সম্পর্কে ক্রেতাদের ধারণা প্রদানসহ নানা আয়োজন। ফেস্টিভ্যালে অংশগ্রহণ করবেন বিভিন্ন অ্যাসোসিয়েশন, ডিজাইনার, শিল্পী, তাঁতীসহ ঐতিহ্যবাহী পণ্যের উদ্যোক্তাগণ। ফেস্টিভ্যালে লোকজ শিল্পীদের সঙ্গীত পরিবেশনা, সেমিনার, ক্রেতা-বিক্রেতা ম্যাচমেকিং ইভেন্টের আয়োজন থাকবে।
১০ ফেব্রুয়ারি ২০২২ সকাল ১১টায় বাংলাদেশে কর্মরত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত এবং কূটনীতিকগণদের জন্য ‘ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশ ডে’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী জনাব ডা. দীপু মনি এমপি। বিশেষ অতিথি ছিলেন ভারত, জাপান ও মালদ্বীপের রাষ্ট্রদূতগণ।
১০ ফেব্রুয়ারি ২০২২ বিকাল ৩টায় ‘ঐতিহ্য সংরক্ষণে যুব সমাজের ভূমিকা’ সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জনাব জাহিদ আহসান রাসেল এমপি।
১১ ফেব্রুয়ারি ২০২২ সকাল ১১টায় ‘ঐতিহ্য সংরক্ষণে প্রযুক্তির ভূমিকা’ সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জনাব মোস্তাফা জব্বার। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান।
১২ ফেব্রুয়ারি ২০২২ সন্ধ্যা ৬টায় সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী জনাব এম এ মান্নান এমপি।
ছাত্র-ছাত্রীদের সম্পৃক্তকরণ
হেরিটেজ হ্যান্ডলুম ফেস্টিভ্যালে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন ডিজাইনারদের প্রোডাক্ট ডেভেলপমেন্টের জন্য দেশের ফ্যাশন ডিজাইন বিষয়ক বিশ্ববিদ্যালয় ও ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চারুকলা ইনস্টিটিউটসহ অন্যান্য স্টেকহোল্ডাদের সম্পৃক্ত করা হয়।
তথ্যকেন্দ্র
মেলায় একটি তথ্যকেন্দ্র স্থাপন করা হবে, যেখানে প্রদর্শিত পণ্যের প্রস্তুতকারক ও আয়োজক প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমের বিভিন্ন তথ্য সরবরাহ করা হয়। ফেস্টিভ্যালে ফ্রি ওয়াইফাই সুবিধা রাখা হয়।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও ফ্যাশন শো আয়োজন
বরাবরের মতোই এবারো ক্রেতা দর্শকদের আকৃষ্ট করা এবং বিনোদনের লক্ষ্যে লোকজ সঙ্গীত পরিবেশনের ব্যবস্থা করা হয়। এছাড়া ফেস্টিভ্যাল উপলক্ষ্যে প্রতিদিন বিভিন্ন ডিজাইনারগণ কর্তৃক তাঁতের তৈরি পোশাকের ‘ফ্যাশন শো’ আয়োজন করা হয়।
০৯-১২ ফেব্রুয়ারি ২০২২ প্রতিদিন সকাল ১০টা- রাত ৮টা পর্যন্ত মেলা দর্শনার্থীদের জন্য খোলা ছিলো।
হেরিটেজ হ্যান্ডলুম ফেস্টিভ্যাল ২০১৮ ও ২০১৯ এর হাইলাইটস
https://www.facebook.com/heritagehandloombangladesh/videos/352364932684871